বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ২টি মূল সড়কের ১৮টি বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব সেতুর অধিকাংশ ভাঙা থাকায় যান চলাচলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন দূরপাল্লার বাস, ট্রাকসহ শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে। মঠবাড়িয়া উপজেলার মোল্লারহাট বাজারসংলগ্ন খালের ওপর বেইলি সেতুটি কয়েক বছর ধরে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে। সেতুর পাটাতনের প্লেটে রয়েছে অসংখ্য জোড়াতালি। কিছুদিন পরপর সেতুটির পাটাতন ভেঙে যায়। আবার মেরামত করা হয়। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বাস ও ট্রাক চালকেরা।
পিরোজপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুরের সওজ বিভাগের আওতায় মঠবাড়িয়া-পাথরঘাটা সড়কে ১২টি এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মঠবাড়িয়া-সাপলেজা সড়কে ছয়টি বেইলি সেতু রয়েছে। এসব বেইলি সেতু আশি ও নব্বইয়ের দশকের শুরুতে স্থাপিত হয়েছিল। সওজের সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৮ মার্চ বরিশালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের একটি সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বেইলি সেতুগুলো সরিয়ে সেখানে গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে। তবে প্রকল্পটি এখানো বাস্তবায়িত হয়নি। সরেজমিনে দেখা গেছে, অধিকাংশ সেতুর পাটাতনের প্লেট ভেঙে ও ছিদ্র হয়ে গেছে।
বহেড়াতলা সেতু ও বাজার সেতু পাটাতনের প্লেট ভেঙে যাওয়ার পর জোড়াতালি দিয়ে সেতু যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। এ ছাড়া কাচারিবাড়ি সেতু, গুচ্ছগ্রাম সেতু, চরকগাছিয়া সেতু, দক্ষিণ চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতু জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। সেতুগুলোর পাটাতনের প্লেট ভেঙে গেছে। দক্ষিণ চরকগাছিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন সেতুর প্লেটে বড় বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৫ জুন গুদিঘাটা সেতু দিয়ে পাথরবোঝাই ট্রাক পার হওয়ার সময় সেতু ভেঙে ট্রাক খালে পড়ে যায়। এতে আসাদুল ইসলাম নামের ট্রাকের চালকের সহকারী নিহত হন। ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল বাঁশবুনিয়া এলাকায় লাল পোল বেইলি সেতু ভেঙে মালবোঝাই একটি ট্রাক খালে পড়ে যায়।
এসব সেতু ভেঙে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে এটি আবার চালু হয়। সেতুগুলোর বিভিন্ন স্থানে জরুরি ভিত্তিতে গার্ডার সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন। তা না হলে যেকোনো সময় সেতু ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।পিরোজপুর সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আলী আকবর বলেন, বেশির ভাগ সেতু জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েকটি সেতুর পাটাতন ভেঙে যাওয়ায় জোড়াতালি দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেইলি সেতুর স্থলে পিসি গার্ডার সেতু তৈরির জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগে পাঠানো হয়েছে।